বর্তমান পৃথিবীতে শক্তিধর দেশগুলো থেকে শুরু করে একেবারে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো পর্যন্ত যে বিষয়টির ওপর খুব গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটি হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি। এজন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও গবেষণার কাজে বিভিন্ন দেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। এটি এখন একটি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এর গুরুত্ব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে নিশ্চয়ই এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। সরকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এ নিয়ে কীভাবে কাজ করছে তার ওপর খুব বেশি তথ্য আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে এখনও সাইবার সিকিউরিটি খুব গুরুত্ব পাচ্ছে না। ডিসক্রিট ম্যাথমেটিক্স আর অ্যালগরিদম কোর্স করার সময় শিক্ষার্থীরা সংখ্যাতত্ত্ব ও ক্রিপ্টোগ্রাফির সঙ্গে খানিকটা পরিচিত হয়। কিন্তু পূর্ণ ছবিটি আমাদের কাছে ধরা দেয় না। অপরদিকে বাংলাদেশে অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান এমন ধরনের কাজ করছে যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির নিরাপত্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ – যেমন ডিজিটাল পেমেন্ট। তাই ওখানে কাজ করতে গিয়েও সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের অনেক কিছু শিখতে হচ্ছে। এখন তাঁরা যদি তাদের এই অতিরিক্ত লেখাপড়া এবং অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরতে পারতেন, তাহলে এটি খুব চমৎকার একটি ব্যাপার হত। আনন্দের বিষয় হচ্ছে, এই চমৎকার কাজটিই করে ফেলেছে নাজমুল কাদের জিন্নূরী। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই নাজমুলের সঙ্গে আমি পরিচিত এবং তাঁকে অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন প্রোগ্রামার বলেই জানি। আর গত কয়েক বছর ধরে সে ডিজিটাল পেমেন্ট নিয়ে কাজ করছে যেখানে তাকে এই বিষয়ে অনেক কিছু শিখতে হয়েছে। আর ডিজিটাল অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দিকটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব বহন করে। তাই কাজ করতে গিয়ে সে নিশ্চয়ই ভেবেছে যে ক্রিপ্টোগ্রাফির বিষয়গুলো আগেভাগে জানা থাকলে তার জন্য কাজ করা আরো সহজ ও আনন্দময় হতো। আর এজন্য নাজমুল ভেতর থেকে এক ধরনের তাগাদা অনুভব করেছে, যার ফলে সে এই বিষয়ে বই লেখার মতো কঠিন কাজটি করে ফেলেছে! নাজমুলকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিবাদন! আমরা প্রযুক্তি নিয়ে মাতামাতি করি, কিন্তু প্রযুক্তির পেছনের বিজ্ঞানটুকু জানতে ও শিখতে আমাদের অনীহা। নাজমুল তার বইয়ের শুরুতেই লিখেছে যে আধুনিক ক্রিপ্টোগ্রাফির পেছনে মূলত রয়েছে গণিত, আর তা মানুষের হাজার বছরের প্রচেষ্টার ফল—হঠাৎ করে আবিষ্কার হওয়া কোনো জিনিস নয়। সে বইয়ের শুরুতেই সংখ্যার ইতিহাস তুলে ধরেছে এবং সংখ্যাতত্ত্বের সহজ বিষয়গুলো আবার পাঠককে মনে করিয়ে দিয়েছে। সেই যে ছোটবেলাতে পড়া মৌলিক সংখ্যা, গসাগু ইত্যাদি। সেখান থেকে সে ধাপে ধাপে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে অয়লারের উপপাদ্য, ফার্মার লিটল থিওরেম, চাইনিজ রিমাইন্ডার থিওরেম—এসব বিষয়ের সঙ্গে। তারপরে সে ক্রিপ্টোগ্রাফির বহুল প্রচলিত অ্যালগরিদমগুলো আলোচনা করেছে। বইয়ের শেষ দিকে সে পাঠককে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও ব্লকচেইন প্রযুক্তির কথাও জানিয়েছে। বইতে আলোচিত বিষয়গুলোর ক্রম দেখে ও পড়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি। বাংলাদেশে যারা কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ে কিংবা সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে আগ্রহী—এমন শিক্ষার্থীদের জন্য এই বইটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপহার। তবে এই বইটি পড়ে কেউ সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ হয়ে যাবে না, বরং এটি পাঠকের সামনে সাইবার সিকিউরিটির জগৎ উন্মোচিত করবে। আশা করছি বইটি পাঠকপ্রিয় হবে এবং আগামী দিনগুলোতে সাইবার সিকিউরিটির জগতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দৃপ্ত পদচারণার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ: অবদান: রাখবে।
$390
In Stock: 15
Categories:
Tags:
Pages | 216 Pages |
---|---|
Cover Design | |
Publisher | দ্বিমিক প্রকাশনী |
Language | |
ISBN | |
Released | N/A |
Consequatur ullam quae aut repellendus perspiciatis sint ut. Quia nemo est beatae maxime eius quas et.
বর্তমান পৃথিবীতে শক্তিধর দেশগুলো থেকে শুরু করে একেবারে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো পর্যন্ত যে বিষয়টির ওপর খুব গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটি হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি। এজন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি ও গবেষণার কাজে বিভিন্ন দেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। এটি এখন একটি দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এর গুরুত্ব ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে নিশ্চয়ই এই বিষয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। সরকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এ নিয়ে কীভাবে কাজ করছে তার ওপর খুব বেশি তথ্য আমার জানা নেই। কিন্তু দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে এখনও সাইবার সিকিউরিটি খুব গুরুত্ব পাচ্ছে না। ডিসক্রিট ম্যাথমেটিক্স আর অ্যালগরিদম কোর্স করার সময় শিক্ষার্থীরা সংখ্যাতত্ত্ব ও ক্রিপ্টোগ্রাফির সঙ্গে খানিকটা পরিচিত হয়। কিন্তু পূর্ণ ছবিটি আমাদের কাছে ধরা দেয় না। অপরদিকে বাংলাদেশে অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান এমন ধরনের কাজ করছে যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির নিরাপত্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ – যেমন ডিজিটাল পেমেন্ট। তাই ওখানে কাজ করতে গিয়েও সফটওয়্যার প্রকৌশলীদের অনেক কিছু শিখতে হচ্ছে। এখন তাঁরা যদি তাদের এই অতিরিক্ত লেখাপড়া এবং অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরতে পারতেন, তাহলে এটি খুব চমৎকার একটি ব্যাপার হত। আনন্দের বিষয় হচ্ছে, এই চমৎকার কাজটিই করে ফেলেছে নাজমুল কাদের জিন্নূরী। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই নাজমুলের সঙ্গে আমি পরিচিত এবং তাঁকে অত্যন্ত প্রতিভাবান একজন প্রোগ্রামার বলেই জানি। আর গত কয়েক বছর ধরে সে ডিজিটাল পেমেন্ট নিয়ে কাজ করছে যেখানে তাকে এই বিষয়ে অনেক কিছু শিখতে হয়েছে। আর ডিজিটাল অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার দিকটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব বহন করে। তাই কাজ করতে গিয়ে সে নিশ্চয়ই ভেবেছে যে ক্রিপ্টোগ্রাফির বিষয়গুলো আগেভাগে জানা থাকলে তার জন্য কাজ করা আরো সহজ ও আনন্দময় হতো। আর এজন্য নাজমুল ভেতর থেকে এক ধরনের তাগাদা অনুভব করেছে, যার ফলে সে এই বিষয়ে বই লেখার মতো কঠিন কাজটি করে ফেলেছে! নাজমুলকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিবাদন! আমরা প্রযুক্তি নিয়ে মাতামাতি করি, কিন্তু প্রযুক্তির পেছনের বিজ্ঞানটুকু জানতে ও শিখতে আমাদের অনীহা। নাজমুল তার বইয়ের শুরুতেই লিখেছে যে আধুনিক ক্রিপ্টোগ্রাফির পেছনে মূলত রয়েছে গণিত, আর তা মানুষের হাজার বছরের প্রচেষ্টার ফল—হঠাৎ করে আবিষ্কার হওয়া কোনো জিনিস নয়। সে বইয়ের শুরুতেই সংখ্যার ইতিহাস তুলে ধরেছে এবং সংখ্যাতত্ত্বের সহজ বিষয়গুলো আবার পাঠককে মনে করিয়ে দিয়েছে। সেই যে ছোটবেলাতে পড়া মৌলিক সংখ্যা, গসাগু ইত্যাদি। সেখান থেকে সে ধাপে ধাপে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে অয়লারের উপপাদ্য, ফার্মার লিটল থিওরেম, চাইনিজ রিমাইন্ডার থিওরেম—এসব বিষয়ের সঙ্গে। তারপরে সে ক্রিপ্টোগ্রাফির বহুল প্রচলিত অ্যালগরিদমগুলো আলোচনা করেছে। বইয়ের শেষ দিকে সে পাঠককে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং ও ব্লকচেইন প্রযুক্তির কথাও জানিয়েছে। বইতে আলোচিত বিষয়গুলোর ক্রম দেখে ও পড়ে আমি মুগ্ধ হয়েছি। বাংলাদেশে যারা কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ে কিংবা সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে আগ্রহী—এমন শিক্ষার্থীদের জন্য এই বইটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি উপহার। তবে এই বইটি পড়ে কেউ সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ হয়ে যাবে না, বরং এটি পাঠকের সামনে সাইবার সিকিউরিটির জগৎ উন্মোচিত করবে। আশা করছি বইটি পাঠকপ্রিয় হবে এবং আগামী দিনগুলোতে সাইবার সিকিউরিটির জগতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের দৃপ্ত পদচারণার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ: অবদান: রাখবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *